top of page
Search
Writer's pictureIndigenous Exclusive

কিংবদন্তিদের জানো - চ থুই ফ্রু



আজকে আমরা আমাদের কিংবদন্তিদের নিয়ে কথা বলব। ইন্দিজিনাস এক্সক্লুসিভের "কিংবদন্তিদের জানো" শীর্ষক প্রতিবেদনেরসর্বপ্রথম প্রতিবেদনে আমরা আজ যে মানুষটার সম্পর্কে জানব তিনি একজন জীবন্ত কিংবদন্তি, আমাদের চ থুই ফ্রু স্যার। তিনিমারমা সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনি শুধুমাত্র মারমা সম্প্রদায়ের নন বরং সম্পূর্ণ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের অন্যতমপ্রধান কারিগর।


চ থুই ফ্রু স্যার একাধারে একজন সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, নৃত্য কোরিওগ্রাফার , ফ্যাশন ডিজাইনার এবংআলোকচিত্রকর। তিনি ১৯৬৫ সালের ২০ শে মে বান্দরবানে জন্মগ্রহণ করেন। বান্দরবানে নাগরিক সভ্যতা গড়ে উঠতে যাদেরঅবদান ছিল সেসব গুটিকয়েক পরিবারগুলোর একটি পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।বোমাং রাজ পরিবারে জন্ম নেন তিনি।বাবা হ্লাথোয়াইফ্রু ( হদা বাবু) মা - অংম্রাচিং এর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। একটি শিক্ষিত পরিবারের অংশ হতে পেরে, তিনিশৈশবকাল থেকেই অন্যান্য শিশু-কিশোরদের থেকে ভিন্নভাবে জগতটাকে আবিস্কার করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তারা ৪ ভাই ৩বোন। তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার সুযোগ পান। তাকে ঘিরে অনেক ভালো মানুষ ছিল বিধায় তিনি ভালো একটা শৈশব পেয়েছিলেন । তার বাবা শিক্ষিত ছিলেন। যার জন্য তার বাবা নিজের সন্তানদেরও সঠিক শিক্ষা দিতে পেরেছিলেন। শুধু তাই নয়মারমা জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, নীতিশাস্ত্র, ইতিহাসসহ বিভিন্ন বিষয়ে সন্তানদের শিক্ষা দিতে পেরেছিলেন। তারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠেন। চ থুই ফ্রু স্যার তার বাবা এবং ভাইদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাদের মাধ্যমেই সাংস্কৃতিক জগতে প্রবেশ করেন। এমনকি তার পিসি, কাকারা মারমা জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িতছিলেন। তিনি ডনবস্কো স্কুল, বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভকরেছেন। যদিও তিনি সেসময়কার সবথেকে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানদের একটি থেকে পড়ালেখা করেছেন, তিনি তার স্বপ্নকে, তার আবেগের জায়গাকে কখনো ভুলেননি। তিনি একজন সফল সাংস্কৃতিক জগতের মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন।



(চ থুই ফ্রু স্যারের কৈশোর কালের ছবি )

তিনি সাংস্কৃতিক জগতে প্রবেশ করেন পরিবারের হাত ধরেই। তার ভাই-বোনেরা আগে থেকেই সাংস্কৃতিক জগতের সাথে জড়িতছিল। তাই এটা স্বাভাবিক ছিল যে তিনি একটা পরিবেশ পেয়েছিলেন এবং তিনিও জড়িত থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাদেরবাসায় গ্রামোফোন ছিল। গ্রামোফোনে ভাই-বোনেরা মিলেমিশে গান শোন তেন, গানের চর্চা করতেন। এভাবেই তার বড় ভাই ওবোনেরা তাকে খুব ভালোভাবেই অনুপ্রাণিত করেছিল। যার ফলস্বরূপ খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেনএবং তখন থেকেই চর্চা শুরু করেন।


(চ থুই ফ্রু স্যারের এবং তার ভাই ও বোনেরা )


তিনি একজন গায়ক হিসেবে প্রথমবারের মত স্টেজে গান করেন চতুর্থ শ্রেণিতে থাকাকালীন। তিনি গানের পাশাপাশি নাচেরপ্রতিও আগ্রহী ছিলেন। যেহেতু মারমা সংস্কৃতি তখন থেকেই ভরপুর ছিল, তিনি ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্নের পথে পা বাড়িয়েছিলেন এবং কঠোর পরিশ্রম করা শুরু করেন। তখনকার ঐতিহ্যবাহী মারমা রয়েল শিল্পীগোষ্ঠীতে সম্পৃক্ত হন এবং এইশিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠানের জন্য প্রথমবারের মত নাচের কোরিওগ্রাফ করেন ১৯৮১ সালে একটি মারমা গান এবং বাংলা ছড়াগানের উপর। মারমাদের ইতিহাসের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গান হিসেবে যে গানকে ধরা হয়, সেই "সাংগ্রাইমা" গানেরকোরিওগ্রাফিতে অন্যতম ভূমিকা রাখেন। গানটি লিখেছিলেন তার বড় দাদা উ চ হ্লা। (যিনি পরবর্তীতে ভিক্ষু হোন এবং উপঞ্ঞা জোত মহাথের নামে সবার কাছে পরিচিত হোন) এভাবেই তিনি আসতে আসতে এই সংগীতাঙ্গনে প্রবেশ করেন যথেষ্টমর্যাদা এবং ভালোবাসা নিয়ে।


মাত্র ২০ বছর বয়সে, তিনি একজন গায়ক এবং কোরিওগ্রাফার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৮৫ সালের ২য় সাফ গেমস"সাফ গেমস ১৯৮৫" এ উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের মাধ্যমে চ থুই ফ্রু স্যার বান্দরবান সাংস্কৃতিক দলের কোরিওগ্রাফ করার সুযোগ পান এবং ১৯৯৩ সালের সাফ গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১০০ জন নৃত্য শিল্পীসহ নৃত্য প্রদর্শনী করেন । যারমূল কোরিওগ্রাফার তিনি ছিলেন। যা অত্যন্ত প্রশংসা পেয়েছিল। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রামে একজন পরিপূর্ণ গায়কহিসেবে যোগদান করেন। তিনি তার কাজ কর্মে ছিলেন অন্যন্য, অসাধারণ, চমৎকার। যার ফলে তার খ্যাতি ছড়াতে বেশিদিনলাগেনি। কিন্তু তিনি তার মূলকে, তার পরিচয়কে ভুলেননি। যার জন্য বাংলায় গান লেখার পরিবর্তে মারমা ভাষায় গান রচনাশুরু করেন। ১৯৯২ সালে তিনি কালচারাল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন তৎকালীন উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট, বান্দরবানে (যা বর্তমানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউট নামে পরিচিত)। তিনি মারমা গান চর্চার প্রতি অত্যন্ত আবেগী এবংমনোযোগী ছিলেন যার জন্য ১৯৯৩ সালে তিনি সর্বপ্রথমবারের মত মারমাদের মিউজিক ব্যান্ড গঠন করেন। এই ব্যান্ডের নামদেন "চিম্বুক ব্যান্ড"। কিন্তু শিক্ষার জন্য চিম্বুক ব্যান্ড এর মেম্বাররা একে একে বাইরে যাওয়া শুরু করলে চিম্বুক ব্যান্ড পুরো দমেকাজ করতে ব্যর্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু তিনি দমে যাননি, বরং আরো আত্মবিশ্বাসের সাথে, আরো পরিকল্পনার সাথে কয়েকজনআর্টিস্ট নিয়ে ১৯৯৭ সালে " মারমা শিল্পী গোষ্ঠী " প্রতিষ্ঠা করেন। এই গ্রুপটি সময়ের সাথে সাথে বড় হতে থাকে এবং একসময়সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটানোর ক্ষেত্রে মানুষদের সচেতন করার জন্য সবথেকে বেশি ভূমিকা পালন করে। তার অপরিসীম পরিশ্রমেরমাধ্যমে মারমা গানের প্রথম টেপড ক্যাসেট এলবাম তিনি ১৯৯৯ সালে বান্দরবানের এম.পি. জনাব বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এরপৃষ্ঠপোষকতায় এবং তার দলের সাহায্য নিয়ে মুক্তি দেন। মারমা গানের প্রথম এই এলবামটির নাম দেন "তং অঙোয়ে"। এইএলবামটি জনসাধারণের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পায়। কিন্তু তিনি দমে যাননি। অনেকেই অনেকভাবে তাকে নিরুৎসাহিতকরার চেষ্টা করেছিল

এই বলে যে এলবামের গানগুলো বার্মিজও না রাখাইনও না। কেমন গান এসব! কিন্তু তিনি এর করা জবাব দিয়েছিলেন এইআহবান করে যে অন্যের প্রচেষ্টাকে নিরুৎসাহিত না করে মারমা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য কিছু করুন। তখন থেকে তিনি খুবগুরুতরভাবে একটা উচ্চাশা করলেন যে, তিনি যেভাবেই হোক তার ভালোবাসার ক্ষেত্র- মারমা সংস্কৃতিকে শিখরে নিয়ে যাবেনএবং প্রতিষ্ঠিত করবেন মারমা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিকে। মারমা গানকে আরো আকর্ষণীয় করে সকল বয়সের মানুষের কাছে খুবসুন্দরভাবে তিনি প্রদর্শন করবেন এই অঙ্গীকার নিয়ে পুরোদমে কাজে লেগে পড়লেন। পরবর্তীতে ওই এলবামের সকল গান খুবজনপ্রিয় হয়ে উঠে যা আজও সকল বয়সের কাছে সমান জনপ্রিয়।তবে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া চিম্বুক ব্যান্ড, তার অনুপ্রেরণায় তারছোট ভাই থুই থুই প্রুর নেতৃত্বে আবার ২০০৬ সালে পুনর্গঠন হয়। যা বর্তমানেও বান্দরবানের সফলতম ও ঐতিহ্যবাহী ব্যান্ডহিসেবে এখনো প্রোগ্রাম করে যাচ্ছে অত্যন্ত সফলতার সাথে।


(চ থুই ফ্রু স্যার তার ভাই থুই থুই প্রু এবং চিম্বুক ব্যান্ডের সাথে )


চ থুই ফ্রু স্যার ছিলেন সবসময় ইতিবাচক এবং কখনো হাল ছেড়ে দেওয়ার মানুষ ছিলেন না। তিনি ৭০টির উপর গান লিখছেনআজ পর্যন্ত এবং ভবিষ্যৎতে আরো লেখার পরিকল্পনা আছে। তিনি ৭ টি সফল এলবাম মুক্তি দিয়েছেন যা অডিও এবং ভিডিওউভয় মাধ্যমে প্রচারিত। তিনি হলেন মারমা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির ভিডিও ক্যাসেট,ভিসিডি ক্যাসেটের অগ্রদূত। বছর কেটে গেছে,যুগবদলে গেছে, সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে, অনেক কিছু বদলে গেছে, মানুষের বয়স বেড়েছে শুধু একটা জিনিস পরিবর্তন হয়নিআজও। আর সেটা হলো মারমা জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতির প্রতি চ থুই ফ্রু স্যারের ভালোবাসা। তিনি কখনো দমে যাননি আজওহাল ছাড়েননি তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে তিনি আজও কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। অডিও রেকডেড টেপ ক্যাসেট থেকেভিসিডি, ডিভিডি এবং বর্তমানের আধুনিক মাধ্যম - ইউটিউবেও তিনি সেভাবেই সচল। বর্তমানে মারমা শিল্পী গোষ্ঠী, বান্দরবানের ইউটিউব চ্যানেল "Marma Culture" এ সকল গান আপ্লোড করা আছে এবং ভবিষ্যতেও নতুন নতুন গান উপহারদিবেন বলে আশাবাদী এবং সফলভাবে সবখানে মারমা গানকে প্রতিষ্ঠিত করতে, প্রদর্শন করতে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তারগানের সৌন্দর্য, স্বাদ আজও নষ্ট হয়নি। তার গানের স্বাদ আজও সেভাবেই সতেজ হয়ে আছে, সেভাবেই বিশুদ্ধ হয়ে আছেযেরকমটা ২০ বছর আগে ছিল। এবং তার গানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা তেমনিই গাঢ় হয়ে আছে।


চ থুই ফ্রু স্যার একজন চৌকস সাংস্কৃতিক জগতের মানুষ। যাকে বলে চারিদিকে দক্ষ। তিনি তার দক্ষতা এবং জ্ঞান শুধুমাত্র যেগানের প্রতি দিয়েছেন সেটা নয়। গানের পাশাপাশি নাচের ক্ষেত্রেও তিনি সমানভাবে তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনিগানের সাথে সাথে গানকে প্রদর্শন করার কলা সৃষ্টি করেছেন। আর নাচ থেকে গান প্রদর্শনের বড় কলা আর কি হতে পারে! তিনিএকজন নাচের জাদুকর। তিনি ৪০টি মারমা গান ও ১৫টি অন্যান্য আদিবাসীদের গানের নাচ কোরিওগ্রাফ করেছেন। তিনিনাচের বিভিন্ন শাখা, আঙ্গিকে কোরিওগ্রাফ করেছেন যার মাধ্যমে মারমাদের সংস্কৃতি, আবেগ,ইতিহাস, অস্তিত্ব প্রদর্শন করা যায়।তিনি মারমাদের জনপ্রিয় নৃত্য যেমন পাখা নৃত্য, ছাতা নৃত্য, প্রদীপ নৃত্য, মাছ ধরা নৃত্য, থালা নৃত্য, পানি তোলা নৃত্য, ঢোলনৃত্য, মনোহরি নৃত্য, প্রজাপতি নৃত্য, ময়ূর নৃত্য ইত্যাদি কোরিওগ্রাফ করেছেন। এটা অবাক করার বিষয় যে একটা মানুষ এত কষ্টকরছে তার জাতিগোষ্ঠীর জন্য, কিন্তু চ থুই ফ্রু স্যার এটা বার বার প্রমাণ করেছেন তিনি একজন অতিমানবীয় গুণ সম্পন্ন মানুষ।তার কর্মগুণাবলী এবং নিজস্ব ইচ্ছার ফলে তিনি শুধুমাত্র মারমা জাতিগোষ্ঠীর নাচকে কোরিওগ্রাফ করেননি বরং পার্বত্যচট্টগ্রামের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর গানেও তিনি তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তার কর্মস্থলের সুবাদে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামেরসকল জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পেছনের প্রধান কারিগর হয়ে উঠেন। তিনি অঙ্গিকার ব্যক্ত করলেন যে তিনি অন্যান্যসম্প্রদায়ের জন্যও কাজ করবেন। তিনি "ম্রোদের চাংক্রান নাচ, চাকদের সাংগ্রাইং নাচ, খিয়াংদের মাছ ধরা নাচ ও জুম নাচ, লুসাইদের জীবনধারা নাচ, তঞ্চগ্যাদের ধান ভানা নাচ, চাকমাদের বিজু নাচ, ত্রিপুরাদের পানি তোলা নাচ, বমদের বিবাহ নাচ" ইত্যাদি কোরিওগ্রাফ করেন। তিনি বিভিম্ন জনগোষ্ঠীর ১৫টি নাচ কোরিওগ্রাফ করেছেন এই পর্যন্ত। তিনি পাহাড়িদের জন্যআশীর্বাদস্বরূপ। তিনি তার কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় সবকিছু কিভাবে পাহাড়িদের উন্নতি করতে পারবেন সেদিকে দিয়েছেন।এবং এটা সুস্পষ্টভাবে বলতে চেয়েছেন আমরা সবাই আলাদা এবং গর্বিত মৌলিক জাতি।


চ থুই ফ্রু স্যার ছবি তোলার প্রতিও আকৃষ্ট ছিলেন। ১৯৯৭/৯৮ সালের দিকে তিনি কিছু মডেলদের ছবি তুলে দিয়েছিলেন যারানিজেদের আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করছিলেন। তার ছবি নিয়ে বান্দরবানের দুইজন মারমা মডেল "আনন্দবিচিত্রা" নামক ম্যাগাজিনের ফটো সুন্দরি প্রতিযোগিতায় ২বছরে ২জন বিজয়ী হয়েছে। ২০০০-২০০১ সালে উপজাতীয় সাংস্কৃতিকইন্সটিটিউট এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ তার তোলা ছবি নিয়ে ক্যালেন্ডার বের করে। তিনি একজন ফ্যাশনডিজাইনারও বটে। তিনি বহু মারমা পোশাকের ডিজাইন করেছেন। তবে তিনি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে সুনাম অর্জনকরেন ১৯৯৯ সালে, যখন তার ডিজাইন করা "ফটোয়া ডিজাইন " "বিনোদন বিচিত্রা" নামক ম্যাগাজিনের প্রতিযোগিতায় প্রথমস্থান অধিকার লাভ করে। তিনি আরো মারমা পোশাক, মারমা অলংকার, মারমা বেশ-ভূসা, নৃত্যের পোশাক ইত্যাদি ডিজাইনকরেছেন।


তিনি নিঃসন্দেহে একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। আমরা তাকে নিয়ে অনেক গর্বিত। তিনি আমাদের গৌরব। তিনি হলেন ওই সোনারকাঠি যা দ্বারা জাতির উন্নয়ন হবে। এমন একজন মানুষের জীবনের কাহিনি নিয়ে লেখা এবং তার জীবনের চমৎকার অর্জনেরকথা সকলের সামনে তুলে ধরা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। কোন একভাবে আমরা তার সাথে যোগাযোগ করি এবংএকটা ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। তিনি অত্যন্ত অমায়িকভাবে আমাদের কথায় রাজি হয়ে যান। সেই ইন্টারভিউনিচে তুলে ধরা হলো।


স্যার আপনার ইচ্ছা সম্পর্কে জানতে চাই।

-আমার ইচ্ছাটা হলো সবাই যেন নিজেদের সংস্কৃতিকে ভালোবাসে, সম্মান করে। আমি মারমা হিসেবে গর্বিত। আমাদেরসংস্কৃতির ভাণ্ডার অত্যন্ত পরিপূর্ণ। আমাদের কোনকিছুর ঘাটতি নেই। সবকিছুই পরিপূর্ণ আছে। শুধু আমাদের অনেকেই জানেনা আমাদের কি আছে কি নেই। তাই জেনে নিয়ে যদি নিজেদের সংস্কৃতির দিকে একটু মনোযোগ দিতে পারি সবকিছু পরিপূর্ণতাপাবে। চর্চা করতে পারলেই সংস্কৃতির সার্থক রূপ ফিরে পাওয়া যাবে। তাই জেনে নিলে,খুঁজে নিলে সবকিছু সম্মৃদ্ধশালী হয়েউঠবে।


আপনার এই প্রচেষ্টা এবং জাতির সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার পেছনের কারন কি?

-আসলে আমি আমার পরিবারের মাধ্যমে খুবই অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমার বাবা আমাকে নিজের সংস্কৃতি, নিজের মানুষদেরভালোবাসতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আমার মা অত্যন্ত হাসি খুশি মানুষ ছিলেন। তিনি আমাকে কাপড় সেলানো, কাপড়বোনা, এবং বিভিন্ন জিনিস ডিজাইন করা শিখিয়েছেন।পাশাপাশি ঘরের নানা কাজও আমাদের শিখিয়েছেন। আমার বড় ভাইও বোনেরাও আমার অনুপ্রেরণার একটি বিরাট অংশ ছিলেন। তারা আমাকে মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শিক্ষা দিয়েছেনএবং আমরা অত্যন্ত ভালো একটি শৈশবকাল কাটিয়েছি একসাথে। মানুষের ভালোবাসা, মমতা আমার শক্তি। আজ যা হয়েছিতাদের অনুপ্রেরণায় হয়েছি। তাদের এত ভালোবাসা পেয়ে, আমি ভবিষ্যৎতে মারমা সংস্কৃতিতে আরো অবদান রাখতে চাই।


(চ থুই ফ্রু এবং তার পরিবার )

স্যার, আপনি অন্যদের কিভাবে অনুপ্রাণিত করেন?

-আমি আমার আবেগের জায়গা বা ভালোবাসা যায় বলি, এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে সবাইকে সবসময় অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি।আমি নিজে আমার ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরি, আমার ঐতিহ্যবাহী থলে বা "রোওয়ে অইক" বহন করি এবং সবসময় নিজেরমানুষদের সামনে অন্য ভাষায় নয় বরং নিজের মাতৃভাষায় কথা বলার চেষ্টা করি। আমরা নিজেদের মাতৃভাষাকে সম্মান দেখায়এবং অন্যদেরও নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলার জন্য অনুরোধ করি। আমি তাদের অনুরোধ করি যাতে তারা যেন নিজেদেরমারমা জাতির স্বকীয়তা, পরিচয়, শেকড়কে কখনো না ভুলে। আমার বড় ভাই উ চ হ্লা সবসময় আমাকে অনুপ্রাণিত করতেননিজের মাতৃভাষাকে ভালোবাসতে। তাই আমাদের কখনো নিজেদের শেকড়কে, মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসাকে ভুলে যাওয়াউচিত নয়।


ভবিষ্যতের জন্য আপনার পরিকল্পনা বা ইচ্ছা কি?

-আমি সবসময় এই একটা স্বপ্ন দেখি যেখানে আমি আমার সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করছি এবং সবথেকে উচু স্থানে সংস্কৃতিকেনিয়ে যেতে চাই। আমি মারমা নৃত্য ও গানকে নিজের স্বকীয়তার মাধ্যমে একটা মজবুত ভিত্তিতে দাঁড় করাতে চাই। কেননাআমাদের ফাউন্ডেশন এখনো মজবুত নয়। আমরা এখনো অন্যদের সংস্কৃতিকে ধারণ করে চলছি। অন্যের সুর, অন্যের তালকেআমরা নিজেদের গানে বা নৃত্যে সংযোজন করি। যা আমাদের ঐতিহ্যের ক্ষতির কারন।অন্যদিকে নিজেদের সংস্কৃতিকে আমরাঅবহেলা করি। তাই আমার স্বপ্ন একটা ভালো ও মজবুত ভিত্তি সৃষ্টি করা। আমাদের লোকগানের সম্ভার অনেক বড়। এসবলোকগানকে সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করতে চাই। মারমাদের প্রচুর লোকগান, বাদ্যযন্ত্র রয়েছে। কিন্তু আমাদের চোখের সামনে এসবহারিয়ে যাচ্ছে। পাংখুং, পালা নৃত্য, মারমাদের নাটক, জ্যাত এর বিভিন্ন নৃত্য ইত্যাদির বিভিন্ন নৃত্যের যুগোপযোগী কোরিওগ্রাফকরতে চাই।পাংখুং এর বিভিন্ন নৃত্য যেমন- যুদ্ধের নৃত্য, বানর নৃত্য, পাংখুসে নৃত্য ইত্যাদি ওয়েথু, লোকগীতি কোরিওগ্রাফ করেআমি সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। অনেকদিনের ইচ্ছা বান্দরবানের সকল ১২টি ভাষাভাষী মানুষের ভাষার গান নিয়ে একটিভিডিওচিত্র তৈরি করতে চাই যা বান্দরবানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরবে।


আপনার এসব কাজ কর্মের পেছনে মানুষগুলো সম্পর্কে জানতে চাই। যারা আপনাকে সাহায্য করেছেন।

- হ্যাঁ অবশ্যই। অনেকগুলো মানুষের সাহায্য ছাড়া এই যাত্রা কখনো এত দূর আসতে পারত না৷ আমার এলবামের একদম শুরুথেকেই যদি বলি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জনাব বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এম.পি মহোদয় আমাদের মারমা শিল্পীগোষ্ঠীকে প্রথম থেকেই সাহায্য করে আসছেন। সেটা অর্থনৈতিকভাবে হোক কিংবা তার উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমেই হোক তিনিসবসময় আমার পাশে ছিলেন। অনেকগুলো যুবক-যুবতীরাও আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন যদিও তাদের অনেক ভালোভবিষ্যৎ পরে আছে। আমি অত্যন্ত স্নেহশীষ ও সম্মানিত বোধ করি এতগুলো মানুষের ভালোবাসা পেয়ে। বান্দরবান পার্বত্য জেলাপরিষদের চেয়ারম্যান জনাব ক্য শৈ হ্লা মহোদয়ও মারমা শিল্পী গোষ্ঠীর বিভিন্ন কাজে অনেকবার সাহায্য করেছেন। তিনি মারমাশিল্পীগোষ্ঠীকে কিবোর্ড, রেকর্ডিং, লেপটপসহ বিভিন্ন কিছু দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। তাদের সহযোগিতায় এসব গানসৃষ্টি হচ্ছে এবং আমাদের সংস্কৃতিকে ও দেশকে সম্মৃদ্ধ করছেন। আমি উনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এটা খুবই খারাপ হবে যদি আমিতাদের নাম না নিই। এছাড়াও সম্প্রতি ২০১৯ সালে আমরা বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির শিল্পীরা যৌথভাবে কাজ করে ৬টি মারমাগান রিলিজ করেছি । আমি এই এলবামের জন্য খাগড়াছড়ির তৎকালীন চেয়ারম্যান জনাব কংজরি মহোদয়কে ধন্যবাদজানাব।উনাকে ধন্যবাদ জানায় আমাদের উদ্যোগকে সফলতা দিয়েছেন। তার সৌজন্যেই এই সুন্দর যৌথ এলবামটি প্রকাশকরতে পেরেছি ইউটিউব প্লাটফর্মে।



(পাবর্ত্য চট্যগ্রাম বিষয়ক মনত্রণালয়ের মনত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এর সাথে সাংগ্রাই উৎসবে গান পরিবেশনকালে )

স্যার, আপনার প্রাপ্তি সম্পর্কে কিছু বলুন।আপনার এওয়ার্ড, এচিভমেন্ট সম্পর্কেও যদি বলতেন।


- আমি মানুষের অগণিত ভালোবাসা পেয়েছি। সবাই যে যার স্থান থেকে আমাকে ভালোবেসেছেন,অনুপ্রাণিত করেছেন, দর্শকস্রোতাদের অনুপ্রেরণা-উৎসাহে নানা কাজ করে যাচ্ছি। আর এওয়ার্ড বা সম্মাননা বিষয়ে কি আর বলব! মানুষ আমার কাজকেকিছু সম্মাননা দিয়েও সম্মান দিয়েছে বটে!


স্যার জনসাধারণ বা পাবলিকের উদ্দেশ্য কিছু বলবেন?

-দেখ, আমি নিজস্ব সংস্কৃতিকে ভালোবাসি বলে কাজ করতে অত্যন্ত ভালোবাসি এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধও করি। এত ভালোবাসা, প্রশংসার পাশাপাশিও কখনো কখনো তিতা কথাও শুনি। কিছু মানুষ আমাদের সর্বদা নানা বিষয়ে প্রশ্ন তুলে। কেন আমাদেরভিডিও কোয়ালিটি বেস্ট হয়না, কেন হাই কোয়ালিটির ভয়েস রেকর্ডার নেই। এসব প্রশ্ন তুলে। কিন্তু সত্যি কথা হলো আমরানিজেদের মেধা এবং নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করি এবং এটা আমাদের জন্য একটু কঠিন হয়ে যায় অনেক ভালো কিছুরআশা পূর্ণ করা। আমরা আপনাদের সাহায্য কামনা করছি সেটা শারীরিকভাবে হোক, অর্থনৈতিক হোক, মানসিকভাবে হোক বাযেভাবেই হোক। আমি নিজের হাতে অনেক গায়ক তৈরি করেছি। তারা আমাকে ভুলে গিয়েছে, তারা তাদের শেকড়কে ভুলে গেছে।মারমা শিল্পী গোষ্ঠী ছেড়ে অন্য সংগঠন করে। অনেকে বলে তাদের আমি সুযোগ দিই না। কিন্তু আসলে সুযোগ তো বন্ধ করেছেতারাই; অন্য সংগঠনে যোগ দিয়ে। আমি তো অবশ্যই চেষ্টা করব মারমা শিল্পী গোষ্ঠীর নবীনদেরকে জনপ্রিয় করতে। কিন্তু তবুওআমার অনুপ্রেরণা আসে জনসাধারণের কাছ থেকে এবং আমি এভাবেই আমার শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই।


স্যার, যুব সমাজের জন্য বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কি কোন কিছু বলতে চান?

-নতুনরাই আমাদের স্বপ্ন, জ্ঞান অর্জনের সাথে নিজ ধর্ম, নিজ সংস্কৃতি, নিজ ভাষাকে যেন গুরুত্ব দেয় এবং সম্মান করে। এটাবলার অপেক্ষা রাখেনা যে তুমি যত উপরেই যাও না কেন একটা সময় আসবে যখন তোমার ওই মাটিতেই ফিরে আসতে হবেদাঁড়ানোর জন্য। একমাত্র নতুনরাই আমাদের সংস্কৃতি, ধর্ম, পরিচয়কে বাঁচাতে পারবে। তাই যখনই আমি তাদের অনুপ্রাণিতকরার সুযোগ পাই, আমি সবসময় তাদের অনুরোধ করি তারা যেন সবার আগে মারমা গান গায় স্টেজে উঠলে তারপর অন্যগান। আমি তাদের নিজেদের পোশাক পড়তে উৎসাহ দিই, নিজেদের সংস্কৃতিকে ভালোবাসতে বলি। যায় হোক ভালো কিছুরআশা করা যাক। হয়ত একদিন তারাই নিজেদের কাধে আমাদের সংস্কৃতিকে লালন পালন করার গুরুদায়িত্ব নিবে।


সচেতনতার জন্য কিছু বলতে চান?

-দেখ আমাদের সংস্কৃতি অনেক পরিপূর্ণ। কিন্তু আমার কোরিওগ্রাফ করা নৃত্য দেশে বিদেশে প্রচারিত হয় অন্য নামে এবং আমাকেএসবের ক্রেডিটও দেওয়া না। কিন্তু সেসব গানের লেখা, সুর, নৃত্যের উপযোগী মিউজিক কম্পোজিশন, সর্বোপরি নৃত্যেরকোরিওগ্রাফ আমার করা। তারা ভিনদেশি সংস্কৃতি বলেও চালিয়ে দেয়। আমাদের মারমাদের গানের সুরকারদের উদ্দেশ্যে কিছুকথা বলতে চাই। মারমাদের কথার সুরের সাথে মিলিয়ে গানের সুর বসাতে হবে নাহলে শব্দের অর্থ অন্যত্র চলে যাবে। আর, নৃত্যেও নিজেদের নিজস্ব মুদ্রা দিয়ে কোরিওগ্রাফ করা উচিত। এখন ভিন্ন জাতির শিল্পীরাও মারমা নাচ করাতে মুদ্রা বিকৃত হচ্ছেএবং অন্যদের মুদ্রার প্রবেশ করানো হচ্ছে মারমা নাচে। খুবই সচেতনতা দরকার। আগামীর চিন্তা করে আমাদের সচেতন হতেহবে। আমরা সচেতন হলেই আমাদের জাতি, সংস্কৃতি মর্যাদা পাবে।


এটা ছিল ইন্টারভিউ পার্ট; তিনি অত্যন্ত ভালোবাসার সাথে অমায়িকভাবে এসব কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। এইআর্টিকেলের লেখক হিসেবে, আমি সত্যিই জানি না আমার শব্দের প্রয়োগ তার মানুষের প্রতি, জাতির প্রতি, সংস্কৃতির প্রতিভালোবাসাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারবে কিনা। এখন তার অর্জন নিয়ে কথা বলা যাক।


চ থুই ফ্রু স্যার অনেকগুলো পুরষ্কার এবং সম্মাননা পেয়েছেন।

★২০১৪ সালে শিল্পকলা একাডেমি বান্দরবান থেকে "নৃত্য কোরিওগ্রাফার" হিসেবে সম্মাননা লাভ করেন

★২০১৫ সালে পার্বত্য জেলা পরিষদ বান্দরবান সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করে।

★বিএমএসসি তাকে সাংস্কৃতিক অবদানের জন্য ২০১৭ সালে সম্মাননা প্রদান করে।

★নৃত্য কোরিওগ্রাফার এবং কণ্ঠশিল্পী হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে তৎকালীন সচিব নব বিক্রম কিশোরত্রিপুরা মহোদয়ের উদ্যোগে জাপান, ভূটান, আমেরিকা, থাইল্যান্ড, সিংগাপুর সফর করেছেন এবং বেসরকারি উদ্যোগে মায়ানমারেসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছেন।

★তার কোরিওগ্রাফ করা নৃত্য দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য টিভি চ্যানেল এবং ডিজিটাল মিডিয়াতে প্রচার করা হয়। বিটিভির"লোক লোকালয়" অনুষ্ঠানে জনাব চৌধুরী আতাউর রহমান মহোদয়ের উদ্যোগে প্রচারিত হয়ে আসছে।

★তার কোরিওগ্রাফ করা মারমা গান ৪০টি এবং অন্যান্য আদিবাসী নাচ ১৫টি।



(গান পরিবেশন এবং নৃত্য প্রদর্শনীর জন্য বিদেশ ভ্রমন কালে )



চ থুই ফ্রু স্যার আমাদের জন্য হীরার মত মানুষ। তার এই অবদান পিছিয়ে পড়া এই জাতির কাছে পাহাড়সম। তিনি নিরলসভাবেবছরের পর বছর ধরে জাতির সংস্কৃতির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে সঠিকভাবে সম্মান করা আমাদের গুরুদায়িত্ব। এইজাতিকে উন্নত করতে জাতিকে সংকল্পবদ্ধ করা অত্যন্ত দরকার। যা ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এর মত উপাদানের উৎকর্ষটারমাধ্যমেই সম্ভব। তার পাশে দাঁড়িয়ে ভালো কিছু করা, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।


চ থুই ফ্রু স্যারের মত ফ্রন্টলাইনারদের গল্প নিয়ে আমরা আবারো হাজির হবো। পাশে থাকুন Indigenous exclusive এরসাথেই।




14 views0 comments

Comments


bottom of page